ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি এখন নির্বাচনী প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত সময় পার করছে। দলটির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি নভেম্বরের প্রথমার্ধেই যে কোনো দিন অন্তত ২০০ আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে বিএনপি।প্রাথমিকভাবে অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরিকল্পনা থাকলেও কিছু রাজনৈতিক জটিলতা ও নতুন পরিস্থিতি বিবেচনায় তা স্থগিত করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ বলেন, “অক্টোবরের শেষ দিকে একক প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। এখন শরিক দলের কাছ থেকেও প্রার্থী তালিকা চাওয়া হয়েছে, তাই চূড়ান্ত করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।”
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা অভিযোগ করেন, জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোট ইস্যু ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির পেছনে একটি গোষ্ঠীর পরিকল্পিত ভূমিকা রয়েছে। তাদের দাবি, কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক দল ছাড়াও সরকারের ভেতরের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই উত্তেজনা বাড়াতে ভূমিকা রাখছেন। তবে বিএনপি কোনো প্ররোচনায় পা দেবে না এবং আপাতত কোনো আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণারও পরিকল্পনা নেই।
আরও পড়ুন: ইসলামকে ব্যবহার করে জাতিকে বিভক্ত করতে চায় একটি দল: সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশন বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী। তবে আমি বিশ্বাস করি, এই সংকট কেটে যাবে। এই দেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এটি আমাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ধৈর্যের পরীক্ষা। বিএনপি সংযমের সাথেই এগোবে। জুলাই জাতীয় সনদ ও এর বাস্তবায়ন নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তার অবসান ঘটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার যেন দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মনোযোগী হয়, সেটাই এখন জরুরি।”
আরও পড়ুন: বিএনপি মাঠে নামলে অন্তর্বর্তী সরকারের টিকে থাকা কঠিন হবে: গয়েশ্বর
অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গত মাসেই জানিয়েছিলেন, অক্টোবরের মধ্যেই অন্তত ২০০ আসনে একক প্রার্থীকে ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে তৈরি সংকটের কারণে তা পিছিয়ে যায়।
বর্তমানে ধারণা করা হচ্ছে, চলতি নভেম্বরের প্রথমার্ধের মধ্যেই বিএনপি একক প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করবে। দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, আগামী সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে—এ বৈঠকের পরই হয়তো দুই-এক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির টাকায় গণভোট সম্ভব: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
