কথপোকথন

(১৮ সেপ্টেম্বর ২০০১ – ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫)
আজকের এই দিনটা তাই আমার কাছে খুবই সুন্দর আর গুরুত্বপূর্ণ।
আজ আমার একটা বিশেষ দিন। সত্যিকারের বিশেষ দিন। জন্মদিন এলে সবার মনে যেমন একটা আনন্দ হয়, অন্য রকম লাগে! এইদিনে আমার ভিতর ঠিক তেমন অদ্ভুত এক অনুভব হয়। এই দিনটা এলেই এখনো আমার চোখ ঝাপসা হয়। কান্না আসে। অনেক কান্না পায়। একা একা অঝোর ধারায় আমি কাঁদি। কত স্ট্রাগল,অপমান,অবজ্ঞা,ভালোবাসা,সাপোর্ট সব নিয়েই বিরতি ছাড়া টানা এত বড় পথ চলা! মাঝে মাঝে ভাবি ধৈয্য নিয়ে এত এত কাজ কখন করলাম! সৃষ্টিকর্তার অশেষ দয়া।তাঁকে ছাড়া কোন কিছুই সম্ভব না।অনেক অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা।২০০১ সালের আঠারো সেপ্টেম্বর, এই দিনে আমি প্রথম পরিচালনার কাজ শুরু। চয়নিকা চৌধুরীর লেখা আর প্রথম পরিচালনার নাটকের নাম শেষবেলায়। বিটিভিতে পরিচালনার প্রথম প্রচারিত নাটকের নাম একজীবনে।
তিনি বলেন,
বিটিভিতে ২০০১ সালের ২৮ অক্টোবর প্রচারিত হয়েছিল। জানেন তো,অনেক ফোন পেয়েছিলাম। তখন তো এই অন লাইনের যুগ ছিলনা। ১০ কোটি মানুষ এক সাথে এক সময় বসে টেলিভিশনের নাটক দেখার অপেক্ষায় থাকতো। আর ফোন করে বেশির ভাগ মানুষ ল্যান্ড ফোনে শুভ কামনা জানাতো,কাজের প্রশংসা করতো। আজ দেখতে দেখতে কতগুলো বছর শেষ হয়ে গেলো।
কিন্ত পথ তো এত সহজ ছিল?? ছিলনা কখনই।অনেক ভালোবাসা, যত্ন আবেগ ছাড়াও অনেক কষ্ট,অপমান, দুঃখও ছিল। তীব্র আঘাত আমাকে এইখানে দাঁড়া করিয়েছে।যারা আমাকে কষ্ট আর আঘাত/ অপমান দিয়ে অবজ্ঞা করেছেন তাদেরকে আজকের দিনে প্রথম ধন্যবাদ দিতে চাই।তা না হলে আমার ভিতরে হয়ত এমন শক্তি আসতো না! অনেক কৃতজ্ঞতা সৃষ্টিকর্তার প্রতি।তাঁর অনুমতি ছাড়া কিচ্ছু হয়না। ধন্যবাদ আমার পরিবারকে। আমার মা শিশির কণা, আমার বাবা এস বি কর্মকার , অরুণ চৌধুরী আমার কন্যা অনুলেখা চৌধুরী, অনন্য প্রতীক চৌধুরী এবং বোন তমালিকা এবং ননদ রুপশ্রী চৌধুরী এর কাছে। যারা আমাকে অনেক মানষিক সাপোর্ট দিয়েছেন। কারণ,একজন মেয়েকে তার লক্ষ্যে আসার জন্যে পারিবারিক সাপোর্ট সবচেয়ে আগে দরকার।
ধন্যবাদ লাইট এন্ড শ্যাডো এর মুজিবুর রহমান এবং জায়েদান রাব্বি এবং তমালিকাকে যারা আমাকে প্রথম প্লাটফর্ম দিয়েছিলেন। কারণ,প্লাটফর্ম জীবনের এক বড় অধ্যায়। এই প্লাটফর্ম না পেলে কারোর সাধ্যি নেই যোগ্যতা দেখানোর।যোগ্যতা দেখানোর জন্যে প্লাটফর্ম মাষ্ট। তাই এই মানুষ গুলোকে আমি কখনই ভুলেও ভুলতে চাইনা।

তিনি আরো বলেন,
আজ অনেক মনে পড়ছে মোস্তফা কামাল সৈয়দকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা আর প্রণাম।
কামাল আংকেল আমার ক্যারিয়ার জীবনের শিক্ষক। মনে পড়ছে আলম ভাই আর রিয়াজ মাহমুদ জুয়েল ভাইকে। পাশাপাশি পাভেল ইসলাম কেও মনে করছি। স্পেশাল কৃতজ্ঞতা আর ধন্যবাদ ইমদাদুল হক মিলন এবং মাহফুজ আহমেদকে। তাঁরা হচ্ছেন বটগাছ আমার এই চলার পথে। আমার এই ছোট জীবনে, যা এখনও বিদ্যমান। তাঁদের দেয়া ছায়ায় আমি এখনো বেঁচে আছি।
ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতাফরিদুল রেজা সাগর আরকোন রেজা কে। তাঁরা আমার পরিবার। ধন্যবাদ ইবনে হাসান খান ভাইকে।
পরিচালনার প্রথম দিকে শর্মিলী আহমেদ,, ডলি জহুর, আফসানা মিমি, সায়েদা তুহিন আরা করিম বিপাশা হায়াৎ, শ্রাবন্তী, শাহেদ,জয় অনেক হেল্প করেছেন ধন্যবাদ। প্রথম বলেই নামগুলো নিলাম। কারণ,তখন আমি কিছুই নই, কে চেনে আমাকে! এই সময়ের মানুষ গুলোর নাম মনে রাখা উচিত। আমার শিক্ষা এটাই বলে।
নাটকের গান প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
জানেন নিশ্চয়ই সেই তখন থেকেই মানে ২৪ বছর আগে থেকেই আমার নাটকে গান থাকতো। ফাহমিদা নবী আপু আর বাপ্পা মজুমদার দাদা এর কাছে ঋণী। যারা তাদের নতুন গান আমাকে দিতেন নাটকের জন্যে। তাই সেই নাটক গুলোও অনেক রোমান্টিক আর গ্লামার মনে হতো।তপন চৌধুরী আর দিনাত জাহান মুন্নি কথাও আমাকে স্বীকার করতেই হবে আজকে। আরো ধন্যবাদ শাকুর মজিদ আর তুহিন বড়ুয়া কে যারা আমাকে প্রথম থেকেই বিশ্বাস করে প্রডিউস করে সাপোর্ট দিয়েছেন ২০০২ সাল থেকে। আমার অনেক ভালো কাজের প্রেরণা তারা। কৃতজ্ঞতা আর ধন্যবাদ প্রডিওসার কাজী রিটন, আনসারুল আলম লিংকন ফারিয়া হোসেন কে। যারা এখনো আমাকে কোন স্বার্থ ছাড়াই সাপোর্ট দিয়ে আসছেন! ধন্যবাদ চন্দ্রা মাহজাবীন আপু আর তারেক মিন্টো কে। এই মানুষ গুলো প্রথম আমাকে লেখা শুরু করিয়েছিলেন।
তিনি আরো ধন্যবাদ ও স্মরণ করেছেন
সকল প্রোডিউসার,সকল নাট্যকার,শিল্পী কুশলী,পুরো টীম,আমার সব ক্যামেরাম্যান এবং আমার সকল এডি,সকল এডিটর, সকল মিউজিক ডিরেক্টর,সকল আলোক প্রক্ষেপণকারী,প্রোডাকশন বয়,ম্যানেজার, সকল রূপকার আর নেপথ্যে যারা আছেন সব্বাইকে।উল্লেখ্য যে আমার হাইয়েষ্ট মেইল অভিনয়শিল্পী হচ্ছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব (১৬১) ফিমেইল অভিনয়শিল্পী হচ্ছেন তারিন (১০০), তবে জাকিয়া বাড়ি মম এর নাম্বার দ্বিতীয় ছিল।নতুন করে দেখতে হবে।
ধন্যবাদ রহমতুল্লাহ তুহিন, মাসুদ মহিউদ্দীন স্পেশালি অমিতাভ রানা এবং সুব্রত মিত্র কে।এই দুইজন মানুষ ২৪ বছর ধরে আছে। এখনো আমার সাথে এবং পাশে।
ধন্যবাদ সকল চ্যানেল এর প্রোগ্রাম ডিপার্টমেন্ট এবং বিজ্ঞাপন ও মার্কেটিং বিপনন কে।
আর স্পেশালি দেশের সকল জার্নালিস্টদের স্পেশাল ধন্যবাদ। যারা আমার যোগ্যতার চেয়ে আমাকে বেশি কাভার দিয়েছেন সাপোর্ট দিয়েছেন। এবং সবশেষে অনেক অনেক ভালোবাসা আমার শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি,আমার দর্শকদের প্রতি।যেই দর্শকদের জন্যে আমি আজ এখানে। যাদের জন্যে আমি নাটক/ টেলিফিল্ম বানিয়েছি,বানাচ্ছি। বানিয়েছি চলচ্চিত্র এবং চয়নিকা চৌধুরী হিসাবে কিছু হবার চেষটা করে যাচ্ছি।
সবার জন্য শুভকাম