মোঃ মাহমুদুল হাবিব রিপন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা জেলায় গবাদিপশুর সংক্রামক রোগ এনথ্রাক্স (তড়কা) প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, গাইবান্ধা সদর। রোগটির বিস্তার ঠেকাতে দপ্তরের পক্ষ থেকে পশুপালক ও সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানান, এনথ্রাক্স গবাদিপশুর এক ভয়াবহ সংক্রামক রোগ যা মানুষেও সংক্রমিত হতে পারে। আক্রান্ত পশুর জ্বর, শ্বাসকষ্ট, শরীর কাঁপুনি ও লোম খাড়া হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। চিকিৎসা না পেলে সাধারণত ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পশুটি মারা যায়। মৃত্যুর পর পশুর দেহ ফেঁপে ওঠে এবং নাক, মুখ, কান, মলদ্বার ও যোনিপথ দিয়ে আলকাতরার মতো রক্ত বের হয় যা এনথ্রাক্সের স্পষ্ট লক্ষণ।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের করণীয় নির্দেশনা:
- এনথ্রাক্সের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
- অসুস্থ পশুকে সুস্থ পশুর কাছ থেকে আলাদা রাখতে হবে।
- কোন অবস্থাতেই অসুস্থ পশু জবাই, কাটা-ছেঁড়া বা খাওয়া যাবে না।
- মৃত পশুর দেহের সব ছিদ্র কাপড় বা তুলা দিয়ে বন্ধ করতে হবে।
- মৃত পশু উঁচু স্থানে অন্তত ৬ হাত গভীর গর্ত করে চুন ছিটিয়ে পুঁতে ফেলতে হবে; কখনোই পানিতে ফেলা যাবে না।
- আক্রান্ত পশুর মল, মূত্র, রক্ত ও বিছানাপত্র পুড়িয়ে ফেলতে হবে বা একই গর্তে পুঁতে ফেলতে হবে।
- আক্রান্ত স্থান ব্লিচিং পাউডার বা অন্য জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- সুস্থ গবাদিপশুকে এনথ্রাক্স টিকা (রিং ভ্যাকসিনেশন) দিতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, এনথ্রাক্স একটি জুনোটিক রোগ অর্থাৎ আক্রান্ত পশু থেকে মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। তাই আতঙ্ক নয়, সচেতনতাই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ।
তিনি আরও বলেন, গবাদিপশু অসুস্থ দেখলে অবিলম্বে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সময়মতো টিকা দিলে এ রোগ থেকে পশু ও মানুষ— উভয়েই সুরক্ষিত থাকবে।
বার্তা:
অসুস্থ পশুর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত টিকা দিন। অসুস্থ পশু জবাই বা মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণই পারে এনথ্রাক্স প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে।
প্রচারে: উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, গাইবান্ধা সদর, গাইবান্ধা।
আরও পড়ুন: ইজিভ্যান চালক আলিপ হত্যার মামলার দুই আসামি গ্রেফতার
