মাহমুদুল হাবিব রিপন: গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নে অবৈধ কয়লা কারখানা গড়ে ওঠায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণ। কোনো ধরনের বৈধ অনুমোদন ছাড়াই এসব কারখানা পরিচালিত হওয়ায় পরিবেশ, কৃষি ও সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৩০টি চুলা দিয়ে অবৈধভাবে কয়লা কারখানা চালু রয়েছে। প্রতিনিয়ত কালো ধোঁয়া নির্গত হয়ে বাতাস দূষিত করছে। ধোঁয়ার ফলে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, পানির উৎস দূষিত হচ্ছে, এবং বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা-পোড়া এবং চর্মরোগে ভুগছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাছগরগড়ীয়া গ্রামের এমদাদুল হক, বাবলু মিয়া, ফিরোজ কবির (রাশেদ মিয়া), জুয়েল মিয়া, সুমন মিয়া ওরফে ফেলু এবং চাকুলী গ্রামের রায়হান ও সোহাগ নামের ব্যক্তিরা এসব কারখানা চালাচ্ছেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্থানীয় কৃষক আবদুল করিম বলেন, আমাদের ফসল নষ্ট হচ্ছে। কয়লার ধোঁয়ায় ধান ও শাকসবজি বেমালুম ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা পরিবার কিভাবে চালাবো।
অন্য এক বাসিন্দা রাশেদা খাতুন বলেন, দিনরাত ধোঁয়ার মধ্যে থাকতে হচ্ছে। বাচ্চারা কাশি-শ্বাসকষ্টে ভুগছে। অথচ কারখানার মালিকরা কোনো আইন মানে না। স্থানীয় যুবক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই কয়লা কারখানা পুরো এলাকায় বিষ ছড়াচ্ছে। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিক না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অবৈধ কয়লা কারখানার বিষয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত চলছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এলাকাবাসীর একমাত্র দাবি হলো অবৈধ কয়লা কারখানা দ্রুত বন্ধ করা হোক এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। নাহলে শুধু ক্ষতি নয়, বড় ধরনের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ও দেখা দিতে পারে।